২০২৫ সালের কোরবানির ঈদ কত তারিখে - ঈদুল আজহা কবে

২০২৫ সালের কোরবানির ঈদ কত তারিখে অর্থাৎ ঈদুল আজাহা করে হবে। ঈদুল আযাহা বা কোরবানি ঈদ মুসলমানদের জন্য বেশ আনন্দের কারণ বছরের দুইটি উৎসবের একটি হলো ঈদুল আযহা অর্থাৎ কোরবানি ঈদ। তো চলুন কোরবানি ঈদ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

২০২৫-সালের-কোরবানির-ঈদ-কত-তারিখে

আমি আজকের এই পোস্ট ব আর্টিকেলে মাধ্যমে আপনাদেরকে জানাবো ঈদুল আযহা ২০২৫ কত তারিখে অর্থাৎ কোরবানি ঈদ ২০২৫ কবে হবে। কোরবানি ঈদ প্রতিটি মুসলমানদের জন্য একটি বড় উৎসব। চলুন কোরবানি ঈদ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। 

পেজ সূচিপত্রঃ ২০২৫ সালের কোরবানির ঈদ কত তারিখে 

  • ২০২৫ সালের কোরবানির ঈদ কত তারিখে
  • কোরবানি শব্দের অর্থ কি 
  • কোরবানি দেওয়ার নিয়ম
  • ঈদুল আযহার মুল ইতিহাস ও তাৎপর্য 
  • ঈদুল আযহা মূল ইতিহাস ও তাৎপর্য পর্ব-২ 
  • শেষ কথাঃ ২০২৫ সালের কোরবানির ঈদ কত তারিখে

২০২৫ সালের কোরবানির ঈদ কত তারিখে

২০২৫ সালের কোরবানির ঈদ কত তারিখে। বাংলাদেশে প্রতিবছর আরবি জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখে ঈদুল আযহা অনুষ্ঠিত হয়। পবিত্র ঈদুল আযহা সব সময় জিলহজ্জ মাসের চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে। ঈদুল আযহা কবে হবে সেটি নির্ধারণ করে বলা যায় না। কারণ এটি চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল এজন্য এটি নির্ধারণ করে আগে বলা টি সঠিক নাও হতে পারে। তাও চলুন জেনে নেওয়া যাক কোরবানি ঈদ কত তারিখে। 

প্রতিবছরের মতো এই বছরে ঈদুল আযহা ইংরেজির জুন মাসের ৭ তারিখে শনিবার অনুষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ। প্রতিবছর আরবি জিলহজ মাসের ১০ তারিখ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত মোট তিন দিন কোরবানি ঈদ পালন করা হয়ে থাকে। এই তিন দিনকে বলা হয়ে থাকে ইয়াওমুল আযহা অথবা ঈদের দিন। মুসলমানদের জন্য কোরবানি ঈদ অনেক আনন্দের একটি দিন। বাংলাদেশের সব মুসলমানদের জন্যই কোরবানি ঈদ অর্থাৎ ঈদুল আযহা।

আপনারা অনেকেই কোরবানি ঈদ সম্পর্কে জানেন না। বছরে একবার কোরবানি ঈদ হয় মুসলমানদের জন্য আনন্দের দুইটি দিন। এর মধ্যে একটি হলো কোরবানি ঈদ আরবি জিলহজ্ব মাসের দশ তারিখ রোজ শনিবার ২০২৫ সালে কোরবানি ঈদ অনুষ্ঠিত হবে। আপনারা যদি কোরবানি ঈদ সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন। কারণ এই পোস্টে আমি কোরবানি ঈদ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। 

কোরবানি শব্দের অর্থ কি 

কোরবানি শব্দের অর্থ কি আরবি করব বা কুরবান শব্দটির উর্দু ও ফার্সিতে কোরবানি নামে রূপান্তরিত। এর অর্থ হলো নৈকট্য বা সান্নিধ্য কুরআনুল কারীমের কোরবানির একাধিক সমার্থক শব্দের ব্যবহার দেখা যায়। যেমন নহর আল্লাহ বলেন حصل لي ربك وانحر সুতরাং আপনি আপনার প্রতিপালকের জন্য নামাজ এবং কোরবানি আদায় করুন। এ কারণে কোরবানির দিনকে يوم النهر বলা হয়। আরেকটি অর্থে ব্যবহারিত হয়েছে কুরআনে সেটি হচ্ছে মুসুক। 

অর্থ আপনি বলুন নিশ্চয়ই আমার নামাজ আমার কোরবানি আমার জীবন আমার মৃত্যুর সবই বিশ্ব জাহানের প্রতিপালক আল্লাহ তাআলার জন্য।' (সূরা আনআমঃ  আয়াত ১৬২) হাদিসের ভাষায় অর্থে কোরবানির ঈদকে ঈদুল আযহা বলা হয়। কুরবানী সম্পর্কে আল্লাহর নির্দেশ কোরবানি শুরু হয়েছিল হযরত আদম (আ.) এর দুই সন্তানের মধ্য দিয়ে। আল্লাহ তাআলা বলেন হে রাসুল আপনি যাদেরকে আদমের পুত্রদ্বয়ের রিপ্রান্ত যথাযথ ভাবে পাঠ করে শোনান যখন তারা উভয়ে কোরবানি করেছিলেন।

কোরবানির প্রচলন হযরত আদম (আ.)  এর যুগ থেকে শুরু হলেও মুসলিম উম্মাহ মূলত কুরবানী হযরত ইব্রাহিম (আ.) এর আল্লাহর সন্তুষ্টির পরীক্ষায় হযরত ইসমাইল (আ.) কে কোরবানির স্মৃতিময় ঘটনা নিজেদের মধ্যে বিরাজমান করা আল্লাহ তায়ালা হযরত ইব্রাহিম (আ.) কে অগ্নি পরীক্ষায় ফেলেছিলেন। এ কোরবানির নির্দেশ প্রদান করে যা তিনি হাসিমুখেই পালন করেছিলেন আল্লাহর প্রেমের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। আল্লাহ তাআলা বলেন যখন ইব্রাহিম (আ.) কে তার কয়েকটি বিষয়ে পরীক্ষা করলেন।

অতঃপর তিনি সেগুলো পূরণ করিলেন তখন তিনি বললেআমি তোমাকে মাউথ জাতির নেতা বানিয়ে দিলাম (সূরা বাকারাঃ আয়াত ১২৪) কেন কোরবানির প্রচলন হল হযরত ইসমাইল (আ.) যখন চলাফেরা করার বয়সে তখন হযরত ইব্রাহিম(আ.) তার প্রাণপ্রিয় সন্তানকে আল্লাহর রাস্তায় কোরবানির জন্য আদিষ্ট হন। হযরত ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম তা প্রাণপ্রিয় সন্তানকে আল্লাহর রাস্তায় কোরবানি করার জন্য যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন এতে মহান আল্লাহ তা'আলা তাঁর উপর সন্তুষ্ট ছিলেন। এজন্য আজ ও বাংলাদেশের মুসলমান সব জিলহজ মাসের ১০ থেকে ১২ তারিখ এই তিন দিনের যেকোনো একদিন ঈদুল আযহা পালন করে থাকেন। 

কোরবানি দেওয়ার নিয়ম 

কোরবানি দেওয়ার নিয়ম

ঈদুল আযহার মুল ইতিহাসও তাৎপর্য 

ঈদুল আযহার মূল ইতিহাস ও তাৎপর্য মুসলিমদের প্রধান দুটি ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে একটি হলো ঈদুল আযহা। ঈদুল আযহা শব্দটি আরবি ভাষা থেকে এসেছে এর অর্থ হলো ত্যাগের উৎসব চলিত বাংলায় এটি কোরবানি ঈদ নামে পরিচিত। ঈদুল আযহার মূল তাৎপর্য এগুলো আল্লাহর নামে নিজের হালাল উপায়ে অর্জিত সম্পদের অংশ ত্যাগ করা বা কোরবানি করা। এ দিনটিতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা সকালবেলা বা দিনের প্রথম ভাগে ইদ্গাহে গিয়ে দুই রাকাত ঈদুল আযাহা নামাজ আদায় করে। 

এবং নামাজ থেকে ফিরে স্ব-স্ব আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী গরু ছাগল মহিষ ভেড়া উট প্রভৃতি শরীয়ত অণুমোদিত পশু আল্লাহর নামে কোরবানি করে। কোরবানির ঈদের তারিখ স্থানীয়ভাবে জিলহজ্ব মাসের চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে। হিজরী বর্ষপঞ্জি বা ইসলামী চন্দ্রপঞ্জিকা অনুযায়ী ঈদুল আযহা জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়। আন্তর্জাতিক তারিখ গণনা নীতি অনুযায়ী গ্রেগ্রীয় পঞ্জিকায় ইদুর আযহা তারিখ প্রতি বছর ভিন্ন হয়।

সাধারণত এক বছর থেকে আরেক বছর ১০ বা ১১ দিন পরে কমতে থাকে। ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহার মাঝে ব্যবধান থাকে দুই মাস ১০ দিন এবং দিনের হিসেবে যা সর্বোচ্চ ৭০ দিন হতে পারে। ইসলামের বিভিন্ন বর্ণনা অনুযায়ী মহান আল্লাহ তায়ালা ইসলামের রাসূল হযরত ইব্রাহিম (আ.) কে স্বপ্ন যোগে তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তুটি কোরবানি করার নির্দেশ দেয়। আল্লাহ বলেন তুমি তোমার প্রিয় বস্তু আল্লাহর নামে কোরবানি কর ইব্রাহিম (আ.) স্বপ্নে এমন আদেশ পেয়ে। 

দশটি উট কোরবানি করলেন পুনরায় তিনি আবারও একই স্বপ্ন দেখলেন অতঃপর তিনি ১০০টি উট কোরবানি করেন। এরপরেও তিনি একই স্বপ্ন দেখে ভাবলেন আমার কাছে তো এই মুহূর্তে প্রিয় পুত্র ইসমাইল (আ.) ছাড়া আর কোন প্রিয় বস্তু নেই। তখন তিনি পুত্র কে কোরবানির উদ্দেশ্যে বস্তুতিসহ আরাফাতের ময়দানে যাত্রা করেন। এ সময় শয়তান আল্লাহর আদেশ পালন করা থেকে বিরত করার জন্য ইব্রাহিম (আ.) ও তাঁর পরিবারকে গ্রলুদ্ধ করেছিল। 

ঈদুল আযহা মূল ইতিহাস ও তাৎপর্য পর্ব-২

ঈদুল আযহা মূল ইতিহাস ও তার তাৎপর্য ইব্রাহিম (আ.) শয়তানকে পাথর ছুড়ে মেরেছিলেন ইব্রাহিম (আ.) যখন আরাফাত পর্বতের ওপর তার পুত্রকে কোরবানি দেওয়ার জন্য পুত্রের গলদেশে ছুরি চালানোর চেষ্টা করে্ন। যখন তিনি বিশ্বস্ত হয়ে দেখেন যে তার পুত্রের পরিবর্তে একটি প্রাণী কোরবানি হয়েছে এবং তার পুত্রের কোন ক্ষতি হয়নি। ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম আল্লাহর আদেশ পালন করার দ্বারা সঠিক পরীক্ষার উত্তীর্ণ হন। 

এতেছিল ষষ্ঠ পরীক্ষা সন্তষ্ট হয়ে আল্লাহ তাআলা ইব্রাহিম (আ.) কে তার খলিল বা বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেন। পবিত্র আল কুরআনে আল্লাহ তা'আলা বলেন অবশেষে আমি তাহাকে পুত্রের সুসংবাদ দান করিলাম। পরে যখন সে তাহার সঙ্গে দৌড়াবার বয়ঃপ্রাপ্ত হইল তখন সে বলিল হে আমার নন্দন নিশ্চয়ই আমি স্বপ্নে দেখিয়াছি যে সত্যই আমি তোমাকে বলিদান করেতেছি অতএব তুমি কি দেখিতেছ দেখ সে বলিল হে আমার পিতা, যে বিষয়ে আদিষ্ঠ হইয়াছ। 

তাহা করো ঈশ্বরেচ্ছায় তুমি আমাকে অবশ্যই সহিষ্ণদিলের অন্তর্গত পাইবে পরে যখন তাহারা দুইজনে অনুগত হইল এবং সে তাহাকে ছেদন করিতে ললাটের অভিমুখে ফেলিল। এবং আমি তাহাকে ডাকিলাম যে হে ইব্রাহিম সত্যিই তুমি স্বপ্নকে সপ্রমাণ করিয়াছ। নিশ্চয়ই আমি এইরুপে হিতকারী লোকদিগকে বিনিয়ম দাম করিয়া থাকি নিশ্চয়ই ইহা সেই সন্তষ্ট পরীক্ষা। আমি তাহাকে বিনিময়ে বৃহৎবলি বা সঙ্গযুক্ত মেষ দান করিলাম। 

এবং তাহার সম্বন্ধে সৎ প্রশংসা ভবিষ্যদঃৎশীয়দিগের প্রতি রাখিলাম। এই ঘটনাকে স্মরণ করে সারা বিশ্বের মুসলিমেরা আল্লাহু তায়ালার সন্তুষ্টির অর্জনের জন্য প্রতি বছর এই দিবস টি উদ্যাপন করে। আর শয়তানকে প্রত্যাখ্যানের কথা স্মরণ করে এখনো হজের সময় শয়তানের অবস্থানের চিহ্ন স্বরূপ নির্মিত তিনটি স্তম্ভের প্রতীকি পাথর নিক্ষেপ করা হয়। হিজরি বর্ষপঞ্জি হিসেবে জিলহজ্ব মাসের দশ তারিখ থেকে শুরু করে ১২ তারিখ পর্যন্ত। তিন দিন ধরে ঈদুল আযহা কোরবানি দেওয়ার নিয়ম আছে। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে কোরবানি দেওয়ার মাধ্যমে তার সন্তুষ্টি অর্জনের সৌভাগ্য দান করুন আমিন। 

শেষ কথাঃ ২০২৫ সালের কোরবানির ঈদ কত তারিখে

২০২৫ সালের কোরবানির ঈদ কত তারিখে প্রতিটি মানুষের জীবনে একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে মহান আল্লাহ তায়ালার নিকট লাভ করা। আর সেটি হচ্ছে কোরবানির মাধ্যমে করা যায় মুসলমানদের বছরে দুইটি উৎসব এর মধ্যে একটি হচ্ছে কোরবানি ঈদ। বাংলাদেশের মুসলমানদের কোরবানি ঈদ বছরে একবার হয়। কোরবানি দেওয়ার অনেক নিয়ম কানুন ও রয়েছে আপনি যদি কোরবানি দেওয়ার সঠিক নিয়ম জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি পড়ুন। 

প্রিয় পাঠক আমি আজকে আপনাদের সাথে কোরবানি ঈদ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি আপনারা যদি কোরবানি ঈদের নিয়ম-কানুন না জেনে থাকেন তাহলে এই পোষ্ট বা আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন। ঈদুল আযহার মূল ইতিহাস এবং ২০২৫ সালে কোরবানি ঈদ কত তারিখে সঠিক জানতে এই পোস্টটি পড়ুন আশা করি আপনার উপকারে আসবে ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

টিপসোহর ব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url